ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয়

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো অনেকেই জানার চেষ্টা করছেন, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয় এই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য। কিন্তু কোথাও কোনো সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না।আর তাই আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয় এই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
১০০% ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয়
হলিস্ট্রিয়ান ফ্রিজিয়ান বা ফ্রিজিয়ান জাতের গরু হলো দুধের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং দুধ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি গাভীদের মধ্যে একটি জাত। তবে এই ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পার্সেন্টেজ বা ক্রসের উপরে এর দুধের পরিমাণ নির্ভর করে। আর তাই আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয় সহ ফ্রিজিয়ান জাতের গরু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব, ফ্রিজিয়ান গরুর উৎপত্তি স্থান, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কেন পালন করবেন, ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর সুবিধা, ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর অসুবিধা, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয় সহ ফ্রিজিয়াম জাতের গরু সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
আর তাই আমরা আশা করব আপনারা ধৈর্য সহকারে এই পুরো আর্টিকেলটি খুব ভালোভাবে পড়ে দেখবেন এবং  ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয় সহ ফ্রিজিয়ান জাত সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য গুলো জেনে নিবেন।

ফ্রিজিয়ান গরুর উৎপত্তি স্থান

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু সাধারণত সাদা কালো অথবা লাল ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। মূলত ফ্রিসল্যান্ডের সাদা জাতের গরু এবং বাভারিয়ার কালো জাতের গরুর ক্রসের মাধ্যমে এই ফ্রিজিয়ান জাতের উৎপত্তি হয়। ফ্রিসল্যান্ড বা বর্তমান নর্থ হলান্ড এবং বাভারিয়া বা বর্তমান জার্মানি হল এই গরুর উৎপত্তি স্থল বা আদি উৎস স্থান।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কেন পালন করবেন

গরু পালন করে লাভবান হতে চাইলে বিশেষ করে দুধ উৎপাদনের জন্য গাভী পালন করে লাভবান হতে চাইলে অবশ্যই ফ্রিজিয়ান বা হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালন করতে হবে। কারণ ফ্রিজিয়ান বা হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী হচ্ছে বিশ্বের সবথেকে বেশি দুধ উৎপাদনকারী গাভী। ধারণা করা হয় বিশ্বে মোট উৎপাদিত দুধের প্রায়ই ৫০% এই জাতের গরু থেকে উৎপাদিত হয়। একটি ভালো মানের ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লিটার পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়।

যেখানে একটি দেশে জাতীয় গাভী থেকে দৈনিক সর্বোচ্চ ২-৪ লিটার দুধ পাওয়া যায়।তাছাড়া এ জাতের গাভী মূলত ১৮ থেকে ২৪ মাস বয়সের মধ্যে প্রথম গর্ভধারণ করে থাকে। এবং গড়ে সাধারণত এই জাতের গাভী প্রায় সাত থেকে আট বছর নিয়মিত দুধ দিয়ে থাকে। আর এই দুধ উৎপাদন তৃতীয় ও চতুর্থ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। এবং এই সময়ের পরবর্তীতে আস্তে আস্তে দুধের উৎপাদন কমে যায়।

এছাড়াও এ জাতের গরু মাংস উৎপাদনের জন্য বেশ জনপ্রিয় একটি জাত। এই জাতের একটি পূর্ণবয়স্ক গাভীর ওজন ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এবং একটি পূর্ণবয়স্ক ষাঁড়ের ওজন ৭০০ থেকে ১০০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। যা আমাদের দেশে জাতীয় গরু থেকে অনেক বড়।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর সুবিধা

নিচে বিস্তারিতভাবে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলো।
  • ফ্রিজিয়ান জাতের গরু সব থেকে বড় সুবিধা হল দুধ ও মাংস উৎপাদনে অন্যান্য যে কোন জাতের গরুর থেকে বেশি লাভবান হওয়া যায়।
  • একটি ভালো মানের ফ্রিজিয়ান গাভী হতে দৈনিক প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লিটার পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়। আর এজন্যই ফ্রিজিয়ান জাতের গাভীকে বলা হয় বিশ্বের সবথেকে বেশি দুধ উৎপাদনকারী গাভী। বিশ্বের মোট উৎপাদিত দুধের প্রায় ৫০% উৎপাদন করে থাকে।
  • এছাড়াও এ জাতের গরু গুলোকে যত্ন নিয়ে পালন করলে এদের রোগ অনেক কম হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ভালো হয়ে থাকে।
  • এই জাতের গরু গুলো সাধারণত শান্তশিষ্ট এবং উগ্র কম হয়ে থাকে।
  • হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান বা ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড় গরুর ওজন প্রায় ৮০০-১২০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভীর ওজন প্রায় ৫০০-৮০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • এছাড়াও এই জাতের গরু পালন করে অন্য জাতের তুলনায় অনেক অনেক বেশি পরিমাণে লাভবান হওয়া যায়।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর অসুবিধা

নিচে বিস্তারিতভাবে ফ্রিজেন জাতের গরুর অসুবিধা গুলো আলোচনা করা হলো।
  • এ জাতের গরু বড় হওয়ায় বা এদের দেহের আকৃতি অনেক বড় হওয়ার ফলে এদের পালন করতে বা রক্ষণাবেক্ষণ করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
  • এছাড়াও ফিজিয়ান জাতের গরু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য জাতের গরু তুলনায় অনেক কম। যার ফলে সঠিকভাবে পরিচর্যা না করলে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই এ জাতের গরু হয়ে থাকে।
  • অন্যান্য জাতের গরু তুলনায় ফ্রিজিয়ান গরু অনেক বেশি খাবার খায়।
  • এ জাতের গরু অতিরিক্ত গরম সহ্য করতে পারে না। যার ফলে গরমের সময় দিনে দুই থেকে তিনবার গোসল করাতে হয় এবং ফ্যানের নিচে রাখতে হয়।
  • এছাড়াও গাভী গরুর ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রেগনেন্সিতে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কারণ গরুকে বীজ দেওয়ার পরেও সেই বীজ কনসেপ্ট করতে চাই না। যার ফলে অনেক সময় লাগে প্রেগন্যান্ট হতে।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায়

আমাদের দেশে মূলত দুই রঙের ফ্রিজিয়ান বা হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান গরু দেখা যায়। সাদা এবং কালো রঙের মিশ্রণে এক রঙ এবং লাল এবং সাদা রংয়ের মিশ্রণে আরেক রং। এছাড়াও এ জাতের গরু মাথা সাধারণত ছোট হয় , ঘাড় লম্বা হয় , সামনের দিকে সরু লম্বাটে হয় , গরু অনেক লম্বা এবং বড় সাইজের হয় এবং শরীরের পিছনের অংশ অনেক ভারি হয়ে থাকে। এছাড়াও খুব ভালো মানের ফ্রিজিয়ান যা চেনার আরো একটি উপায় হল, এর নাক, পায়ের খুঁড়া এবং শিংয়ের কালার সাদা অথবা গোলাপি রঙের এবং জিহবার কালার সাদা হয়ে থাকে। ওলান অনেক বড় এবং ঢিলেঢালা হয়ে থাকে।

ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয়

একটি ভালো মানের ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে পারে। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী ফ্রিজিয়ান জাতের গাভীগুলো থেকে এত পরিমাণে দুধ সাধারণত খুব কম পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশে ২০ থেকে ৩০ লিটার পর্যন্ত দুধের গাভী সচরাচর বেশি দেখা যায়। এছাড়াও এ জাতের গাভীর দুধে পরিমান অনেকটা নির্ভর করে গাভীর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের উপরে। আর তাই গাভীকে বেশি বেশি ঘাস এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ দানাদার বা অন্যান্য খাবার যত বেশি খাওয়াবেন তত বেশি দুধ পাওয়া যাবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি, ফ্রিজিয়ান গরুর উৎপত্তি স্থান, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কেন পালন করবেন, ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর সুবিধা, ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর অসুবিধা, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার সহজ উপায় এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী কত লিটার দুধ দেয় সহ ফ্রিজিয়াম জাতের গরু সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
আর তাই এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা কোন উপকারে এসে থাকে তবে অবশ্যই আপনারা আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। এবং আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করবেন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Club Solver এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url