বাউ মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং বাউ মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা বিস্তারিত দেখুন
প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো অনেকেই বাউ মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং বাউ মুরগির
ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাচ্ছেন। কিন্তু কোথাও কোনো সঠিক
তথ্য বা উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে
জানাবো,বাউ মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং বাউ মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সহ বাউ মুরগি
সম্পর্কিত সকল তথ্য।
বাউ মুরগির মাংস খেতে দেশি মুরগির মতো এবং দেখতেও অনেকটা দেশি মুরগির মত হওয়ায়
এই নতুন জাতের মুরগি পালন বর্তমানে আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর তাই
আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো,বাউ মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং বাউ
মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সহ বাউ মুরগি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
ভূমিকা
পাঠক বৃন্দ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব,বাউ মুরগির
বাচ্চার দাম কত , বাউ মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা , বাউ মুরগি পালন পদ্ধতি ,বাউ
মুরগির খাদ্য তালিকা ,বাউ মুরগির ভিটামিনের তালিকা ,বাউ মুরগির ঔষধের তালিকা ,বাউ
মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এবং বাউ মুরগি বছরে কয়টি ডিম দেয় তার বিস্তারিত তথ্য।
আর তাই আমরা আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পুরোটা পড়বেন এবং
বাউ মুরগি সম্পর্কিত সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে জেনে নিবেন।
বাউ মুরগির বাচ্চার দাম কত
বাউ মুরগির বাচ্চার দাম বাজারের অবস্থার উপর নির্ভর করে, যেমন অঞ্চল, সময়,
বাচ্চার বয়স এবং অন্যান্য ভেরিয়েবল। তবে সাধারণভাবে, বাউ মুরগির বাচ্চার দাম
প্রায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা প্রতি জিরো বাচ্চা হতে পারে। তবে দাম আরো কম বা বেশি হতে
পারে।
আপনি যদি নিজের এলাকার বাজারে দাম জানাতে চান, তাহলে স্থানীয় পোল্ট্রি ফার্ম বা
বাজারে গিয়ে খোঁজ করতে হবে।
বাউ মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা
বাউ মুরগির জন্য সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন দেয়া হয় যা তাদের স্বাস্থ্য
রক্ষা করতে সহায়ক। এসব ভ্যাকসিন বাচ্চাদের সংক্রমণ, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া থেকে
রক্ষা করে। এখানে বাউ মুরগির জন্য কিছু সাধারণ ভ্যাকসিনের তালিকা দেওয়া হলো-
বিশেষ দ্রষ্টব্য
সঠিক সময় এবং ডোজ নিশ্চিত করার জন্য আপনার স্থানীয় ভেটেরিনারিয়ান বা পোল্ট্রি
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত। এছাড়াও ভ্যাকসিনের জন্য ভালো মানের এবং স্বীকৃত
ব্র্যান্ড ব্যবহার করা উচিৎ।
এগুলি সাধারণ ভ্যাকসিন হলেও, স্থানীয় পরিস্থিতি অনুযায়ী কিছু ভ্যাকসিনের
প্রয়োজনীয়তা পরিবর্তিত হতে পারে।
বাউ মুরগি পালন পদ্ধতি
বাউ মুরগি পালন একটি লাভজনক পোল্ট্রি ব্যবসা হতে পারে, তবে এর জন্য সঠিক পরিচর্যা
এবং পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। বাউ মুরগি সাধারণত দেশীয় মুরগি হিসেবে পরিচিত এবং
এটি স্বাভাবিক পরিবেশে জীবনযাপন করতে পছন্দ করে। বাউ মুরগি পালনের পদ্ধতি নিচে
বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মুরগির নির্বাচন
বাচ্চা নির্বাচন: ভালো মানের বাচ্চা নির্বাচন করুন। বাচ্চা নির্বাচন করার সময়
সুস্থ, সক্রিয় এবং রোগমুক্ত বাচ্চা বেছে নিন।
বাচ্চার বয়স: প্রথমে ১-২ মাস বয়সী বাচ্চা দিয়ে পালন শুরু করা ভালো।
বাসস্থানের প্রস্তুতি
ঘর নির্মাণ: বাউ মুরগির জন্য একটি সুরক্ষিত এবং আরামদায়ক ঘর তৈরি করুন।
এটি যেন বাতাস চলাচল করে এমন, পরিষ্কার এবং শুকনো থাকে।
ফ্লোরিং: মাটির উপর পলিথিন বা কাঠের প্ল্যাঙ্ক রাখতে পারেন, এবং তার উপরে
পলিথিন বা শুকনো গাছের পাতা দিতে পারেন যাতে মুরগির পা নোংরা না হয়।
এয়ার ফ্লো: ঘরের মধ্যে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে হবে, যাতে মুরগির
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস (যেমন অ্যামোনিয়া) তৈরি না হয়।
হিটার বা এয়ার কন্ডিশনার: শীতকালীন জন্য হিটার বা অন্যান্য তাপ সঞ্চালন
ব্যবস্থার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, কারণ বাচ্চাদের ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করা
প্রয়োজন।
খাবারের ব্যবস্থা
বিশেষ খাবার: বাউ মুরগির জন্য ভালো মানের পোল্ট্রি ফিড (প্রথমে Starter Feed, পরে
Grower Feed এবং ফাইনালি Layer Feed) প্রদান করুন। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে।
প্রাকৃতিক খাবার: বাউ মুরগি প্রাকৃতিক খাবার যেমন পোকামাকড়, ঘাস, শস্য ইত্যাদিও
খেতে পারে। তবে তাদের জন্য সঠিক পরিমাণে কৃত্রিম ফিডও দেওয়া উচিত।
পানি: সব সময় পরিষ্কার এবং তাজা পানি রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য পরিচর্যা
ভ্যাকসিন: বাউ মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন যেমন নিউক্যাসল ডিজিজ, ফাউল
পক্স, গাম্বরো ডিজিজ, মারেক্স ডিজিজ ইত্যাদি নিয়মিত দিতে হবে।
প্যারাসাইট নিয়ন্ত্রণ: কৃমি ও পরজীবী দূরীকরণের জন্য ওষুধ প্রয়োগ করা
উচিত। এছাড়া, মুরগির ঘর এবং পরিবেশ নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
পিপঁড়ে ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ: ঘরের মধ্যে পিপঁড়ে বা অন্য কীটপতঙ্গ আসা
এড়ানোর জন্য সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
বাচ্চার বয়স অনুসারে পরিচর্যা
প্রথম ১-৩ সপ্তাহ: বাচ্চাদের জন্য সঠিক তাপমাত্রা (প্রথম সপ্তাহে ৩৫°C
থেকে ৩৭°C) রাখতে হবে। পর্যাপ্ত আলো ও সঠিক খাবার দিতে হবে।
৩-৬ সপ্তাহ: এখন বাচ্চাদের খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন
ও প্রাপ্তবয়স্ক মুরগির সাথে পরিচিতি করানো উচিত।
৬-১২ সপ্তাহ: মুরগির শরীরের বৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। সঠিক পুষ্টি, পর্যাপ্ত
স্থান এবং স্বচ্ছ জল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
১২ সপ্তাহ পর: এই সময়ের মধ্যে বাচ্চাদের পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক মুরগি হিসেবে
পরিণত হবে।
৬. প্রজনন ও ডিম সংগ্রহ
ডিম সংগ্রহ: বাউ মুরগি সাধারণত সপ্তাহে ৩-৪টি ডিম দেয়। ডিম সংগ্রহের সময়
পরিষ্কার এবং শুকনো পরিবেশে রাখতে হবে।
প্রজনন: বাচ্চা উৎপাদনের জন্য পুরুষ এবং মহিলা মুরগি অবশ্যই থাকবে। মুরগির
বয়স ৬ মাসের পর প্রজনন শুরু হয়।
পালনের খরচ ও লাভ
খরচ: শুরুতে বাচ্চা, খাবার, ভ্যাকসিন, এবং অন্যান্য সামগ্রীতে কিছু খরচ
হবে। তবে, বাউ মুরগির খামার ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করা হয়, তবে লাভের পরিমাণও
ভালো হতে পারে।
লাভ: বাচ্চা বিক্রি, ডিম বিক্রি এবং প্রাপ্তবয়স্ক মুরগি বিক্রি থেকে লাভ
হতে পারে। এছাড়া, প্রাকৃতিকভাবে পালিত মুরগি গুণগতভাবে ভালো মাংস উৎপন্ন করে।
সুরক্ষা ব্যবস্থা
বাউ মুরগি পালন করতে গেলে শিকারী প্রাণী (যেমন কুকুর, বিড়াল বা শিয়াল) থেকে
সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য খাঁচা বা বাঁধাই ব্যবস্থা রাখতে হবে।মুরগির জন্য
অতিরিক্ত শব্দ বা অস্বস্তিকর পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে।
সিজনাল পরিবর্তন
শীতকালে মুরগির জন্য বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে, যেমন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত
খাদ্য এবং পানি সরবরাহ করতে হবে।
গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেশি হলে হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করার জন্য কুলিং ব্যবস্থা
রাখতে হবে।
বাউ মুরগি পালন একটি মনোযোগী এবং সতর্ক পদ্ধতি, তবে সঠিক পরিচর্যা এবং খাদ্য
ব্যবস্থাপনা করার মাধ্যমে এটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।
বাউ মুরগির খাদ্য তালিকা
বাউ মুরগি পালন করার জন্য তাদের স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধি সঠিকভাবে বজায় রাখতে একটি
ভাল খাদ্য তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাউ মুরগি সাধারণত প্রাকৃতিক খাবার যেমন
ঘাস, পোকামাকড় ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে, তবে সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য তাদের
খাদ্য তালিকায় কিছু বিশেষ উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।এখানে বাউ মুরগির জন্য
একটি উপযুক্ত খাদ্য তালিকা দেওয়া হলো।
শুরুতে (বাচ্চাদের জন্য)
স্টার্টার ফিড (Starter Feed)
বাচ্চাদের জন্য পোল্ট্রি স্টার্টার ফিড প্রদান করুন। এই ফিডটি উচ্চ প্রোটিন
(২০%-২৪%) এবং শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয়ে তৈরি হয়।
প্রাথমিক বয়সে (১-৩ সপ্তাহ) বাচ্চাদের জন্য সঠিক পুষ্টি এবং ভিটামিনের প্রয়োজন
হয়, যা স্টার্টার ফিডে পাওয়া যায়।
পানি
বাচ্চাদের জন্য তাজা এবং পরিষ্কার পানি সরবরাহ করতে হবে।
মাঝারি বয়স (৩-৮ সপ্তাহ)
গ্রোয়ার ফিড (Grower Feed)
এই সময় মুরগির বৃদ্ধি চলমান থাকে, তাই তাদের খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ ১৮%-২০%
থাকতে হবে।
খরচের দিক থেকে, এই খাদ্য অধিকতর সাশ্রয়ী এবং পুষ্টিকর।
প্রাকৃতিক খাবার
পোকামাকড়, ঘাস, শস্য (যেমন: ধান, ভূট্টা) ইত্যাদি। মুরগি সাধারণত এ ধরনের খাবার
খুব পছন্দ করে।
পানি
পর্যাপ্ত তাজা পানি প্রদান করতে হবে।
প্রাপ্তবয়স্ক (৮-১২ সপ্তাহের পর)
লেয়ার ফিড (Layer Feed)
এই পর্যায়ে মুরগির জন্য লেয়ার ফিড উপযুক্ত। এতে ১৬%-১৮% প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের
পরিমাণ বেশি থাকে, যা ডিম উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
ডিম উৎপাদনের জন্য ক্যালসিয়াম
সঠিক ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন ক্যালসিয়াম সাইট্রেট বা ঝুড়ির খোল, চুন পাথর
ইত্যাদি সরবরাহ করা যেতে পারে।
গম বা ধান
গম, ভূট্টা, এবং বিভিন্ন শস্য দেয়া যেতে পারে, যা তাদের শক্তি ও স্বাস্থ্য ভালো
রাখে।
প্রাকৃতিক খাবার
মুরগি প্রাকৃতিক খাবার যেমন বিভিন্ন শাকসবজি, ফল, এবং পোকামাকড় খেতে পছন্দ করে।
বিশেষ খাদ্য উপাদান
ভিটামিন এবং মিনারেল
মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন (A, D, E, K) এবং মিনারেল (যেমন ক্যালসিয়াম,
ফসফরাস) যোগ করতে পোষাক ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট দেয়া যেতে পারে।
প্রোটিন উৎস
মুরগির জন্য বিভিন্ন প্রোটিন উৎস যেমন মিষ্টি আলু, ডাল, মাছের গুঁড়া, তেল, এবং
সোয়া প্রোটিন দেয়া যেতে পারে।
অয়েল (তেল)
ফ্যাটের উৎস হিসেবে মুরগিকে তেল (বিশেষ করে সয়াবিন তেল বা ক্যানোলা তেল) দেয়া
যেতে পারে, যা তাদের শক্তি এবং শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাবার উপাদান
ভুট্টা (Corn)
ভুট্টা মুরগির শক্তির জন্য একটি ভালো উৎস। এটি ডিম উৎপাদন এবং পেশী বৃদ্ধিতে
সাহায্য করে।
ধান
মুরগি ধানও খেতে পছন্দ করে, যা তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
চেরা (Chopped greens)
শাকসবজি যেমন পালং শাক, লালশাক ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। এগুলো মুরগির পুষ্টির
জন্য উপকারী।
অ্যামিনো অ্যাসিড
মুরগির স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আমিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন মুসুর
ডাল ও সয়া প্রোটিন দেয়া যেতে পারে।
পানি
সব সময় পরিষ্কার এবং তাজা পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি মুরগির হজমে সাহায্য করে
এবং ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
গরমকালে
গরমকালীন সময়ে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে মুরগির শরীর শীতল
থাকে এবং তারা জলবায়ুর কারণে অসুস্থ না হয়।
বিশেষ সতর্কতা
খাবারের তাজত্ব
খাদ্য নষ্ট হয়ে গেলে বা পচে গেলে তা মুরগির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই খাদ্য
তাজা ও পরিষ্কার রাখা জরুরি।
কৃত্রিম খাবার
কৃত্রিম ফিড বা খাবার উপাদান দীর্ঘমেয়াদী প্রয়োগে কিছু সমস্যা হতে পারে। তাই ভারী
পরিমাণে কৃত্রিম খাদ্য থেকে বিরত থাকা ভালো।
অতিরিক্ত খাবার
অতিরিক্ত খাবার দেয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
হতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
নিচে বিস্তারিতভাবে বাউ মুরগি বাণিজ্যিকভাবে পালনে ৫০ কেজি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার
তৈরীর একটি তালিকা দেওয়া হল।
বাউ মুরগি পালনে সঠিক খাদ্য প্রদান তাদের সঠিক বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য এবং ডিম উৎপাদন
নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক খাবারের সঙ্গে সুষম পুষ্টির জন্য পোল্ট্রি
ফিডের ব্যবহার করলে মুরগি সুস্থ এবং উৎপাদনশীল থাকে।
বাউ মুরগির ভিটামিনের তালিকা
বাউ মুরগির সঠিক বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য এবং ডিম উৎপাদন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়
ভিটামিন প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুরগির শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের
অভাব হলে তাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা হতে পারে, যেমন বৃদ্ধি কমে যাওয়া, রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, ডিম উৎপাদনে সমস্যা ইত্যাদি। নিচে বাউ মুরগির জন্য কিছু
গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনের তালিকা দেয়া হলো:
বাউ মুরগির সঠিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ডিম উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য
এই ভিটামিনগুলির সঠিক পরিমাণে সরবরাহ করা প্রয়োজন। পোল্ট্রি ফিডে এই ভিটামিনগুলো
সাধারণত যুক্ত থাকে, তবে প্রাকৃতিক খাবার যেমন শাকসবজি, ডিম, মাছ ইত্যাদির
মাধ্যমে মুরগিকে এই ভিটামিনগুলো প্রদান করা যেতে পারে।
বাউ মুরগির ঔষধের তালিকা
বাউ মুরগির সুস্থতা এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে।
কিছু ঔষধ সাধারণভাবে রোগের চিকিৎসা বা প্রতিরোধে ব্যবহার হয়, যখন কিছু ঔষধ মুরগির
স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং তাদের শারীরিক সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। নিচে
বাউ মুরগির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঔষধের তালিকা দেওয়া হলো:
ঔষধ ব্যবহারের সতর্কতা
- ঔষধ ব্যবহারের আগে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
- যেকোনো ঔষধ প্রয়োগের পর মুরগির স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
- ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা প্রয়োগের সঠিক সময়সূচী অনুসরণ করতে হবে।
- ঔষধের সঠিক ডোজ এবং ব্যবহারের সময়সীমা অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- সঠিক চিকিৎসা ও ঔষধের প্রয়োগ মুরগির স্বাস্থ্য ও উৎপাদন সক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
বাউ মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
বাউ মুরগি সাধারণত ৫-৭ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে। তবে, এটি বিভিন্ন পরিস্থিতির
উপর নির্ভর করে, যেমন:
প্রজাতি: বাউ মুরগির বিভিন্ন ধরনের প্রজাতি থাকতে পারে, এবং তাদের ডিম
দেওয়ার সময় শুরু হতে পারে কিছুটা ভিন্ন। কিছু বাউ মুরগি কিছুটা দেরিতে ডিম দেওয়া
শুরু করে।
খাদ্য এবং পুষ্টি: মুরগির সঠিক পুষ্টি ও খাদ্য যদি পর্যাপ্ত হয়, তবে সঠিক সময়ে
ডিম দিতে শুরু করবে। সুষম খাদ্য এবং ভিটামিন-মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার ডিম উৎপাদন
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
পরিবেশ: মুরগির পরিবেশ যেমন, তাপমাত্রা, আলো, আর্দ্রতা ইত্যাদি ডিম
উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। সাধারণত, ভালো আলোর পরিস্থিতিতে মুরগি দ্রুত ডিম দিতে
শুরু করে।
স্বাস্থ্য: মুরগির স্বাস্থ্য যদি ভালো থাকে এবং কোনো রোগ বা শারীরিক
সমস্যা না থাকে, তবে তারা নিয়মিতভাবে ডিম দিতে সক্ষম হয়।
এছাড়া, বাউ মুরগির ডিমের পরিমাণ প্রথাগত পোল্ট্রি মুরগির তুলনায় কিছুটা কম হতে
পারে, কিন্তু তাদের ডিমের গুণগত মান বেশি থাকে।
বাউ মুরগি বছরে কয়টি ডিম দেয়
বাউ মুরগি সাধারণত প্রতি বছর ৬০-১০০টি ডিম দেয়, তবে এই সংখ্যা বিভিন্ন কারণে
পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু কারণ যা ডিম উৎপাদনের পরিমাণকে প্রভাবিত করে:
বয়স
যুবক বাউ মুরগি: বাউ মুরগি সাধারণত ৫-৭ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে। প্রথমে
ডিমের পরিমাণ কিছুটা কম হতে পারে।
বয়স বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে: বাউ মুরগির বয়স বাড়ানোর সাথে ডিম দেওয়ার পরিমাণ বাড়তে
পারে, তবে তার গুণগত মান এবং পরিমাণ প্রথাগত পোল্ট্রি মুরগির চেয়ে কিছুটা কম
থাকে।
খাদ্য এবং পুষ্টি
সঠিক খাদ্য এবং পুষ্টি, বিশেষ করে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল সরবরাহ ডিম
উৎপাদনে বড় ভূমিকা পালন করে। যদি মুরগির পুষ্টি উপাদান কম থাকে, তবে ডিম উৎপাদন
কম হতে পারে।
পরিবেশ এবং আলোর পরিস্থিতি
সূর্যালোক: বাউ মুরগি দিনে ১২-১৪ ঘণ্টা আলো পেলে ডিমের উৎপাদন বাড়ে।
শীতকালে আলো কম থাকলে, ডিমের উৎপাদনও কমে যেতে পারে।
তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা: অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পরিবেশেও ডিমের উৎপাদনে
প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা
মুরগির স্বাস্থ্য ভালো থাকলে, তারা নিয়মিত এবং সুস্থভাবে ডিম দেবে। যেকোনো রোগ বা
শারীরিক সমস্যা ডিমের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে।
প্রজাতি এবং জেনেটিক ফ্যাক্টর
বাউ মুরগির ডিম উৎপাদন প্রথাগত পোল্ট্রি মুরগির তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে, কারণ
তারা সাধারণত প্রাকৃতিক জীবনযাপন করে এবং তাদের প্রজনন হার কিছুটা কম থাকে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি,বাউ
মুরগির বাচ্চার দাম কত , বাউ মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা , বাউ মুরগি পালন পদ্ধতি
,বাউ মুরগির খাদ্য তালিকা ,বাউ মুরগির ভিটামিনের তালিকা ,বাউ মুরগির ঔষধের তালিকা
,বাউ মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এবং বাউ মুরগি বছরে কয়টি ডিম দেয় তার বিস্তারিত
তথ্য।
তাই এই আর্টিকেলটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে অথবা কোন উপকারে আসে তবে অবশ্যই
আপনারা আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের এই ওয়েবসাইটটি
নিয়মিত ফলো করবেন।
ধন্যবাদ
Club Solver এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url