ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো অনেকেই ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাচ্ছেন। কিন্তু কোথাও কোনো সঠিক তথ্য বা উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো,ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সহ ব্রয়লার মুরগি সম্পর্কিত সকল তথ্য।
ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

ব্রয়লার মুরগি হলো এক ধরনের দ্রুত বর্ধনশীল মুরগি, যা বিশেষভাবে মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। ব্রয়লার মুরগি বাণিজ্যিকভাবে পালন করলে সাধারণত এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিচিত। আর তাই আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো,ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সহ ব্রয়লার মুরগী সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।

ভূমিকা

পাঠক বৃন্দ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব,ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত , ব্রয়লার মুরগির বৈশিষ্ট্য , ব্রয়লার মুরগি পালনের সুবিধা , ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা , ব্রয়লার মুরগি পালন পদ্ধতি ,ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তালিকা ,ব্রয়লার মুরগির ভিটামিনের তালিকা ,

ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা ,ব্রয়লার মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এবং ব্রয়লার মুরগি বছরে কয়টি ডিম দেয় তার বিস্তারিত তথ্য।আর তাই আমরা আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পুরোটা পড়বেন এবং ব্রয়লার মুরগি সম্পর্কিত সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে জেনে নিবেন।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম সময় এবং স্থানভেদে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত ১ দিনের বাচ্চার দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই দাম বাড়তে পারে যেমন, ৭ দিনের বাচ্চার দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা হতে পারে।
বিভিন্ন কোম্পানির বাচ্চার দামেও ভিন্নতা দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিউ হোপ কোম্পানির বাচ্চা ৪৬ থেকে ৪৭ টাকায় পাওয়া যায়, প্যারাগন ৪৩ থেকে ৪৭ টাকা, এবং কাজী ফার্মস ৪৫ থেকে ৪৯ টাকায় বিক্রি করে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ বাজারের চাহিদা, সরবরাহ এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কারণে এই দাম সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে। সর্বশেষ এবং সঠিক দামের তথ্যের জন্য স্থানীয় সরবরাহকারী বা খামারিদের সাথে যোগাযোগ করা উপযুক্ত হবে।

ব্রয়লার মুরগির বৈশিষ্ট্য

  • দ্রুত ওজন বৃদ্ধি: ৪০-৫০ দিনে প্রায় ১.৫-২.৫ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।
  • খাদ্যের রূপান্তর দক্ষতা: কম খাবারে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়।
  • নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পালন: এদের জন্য তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং আলো নিয়ন্ত্রণ খুব গুরুত্বপূর্ণ।
  • বাজার চাহিদা: মাংস তুলনামূলক নরম এবং সহজপাচ্য হওয়ায় এটি খুব জনপ্রিয়।

ব্রয়লার মুরগি পালনের সুবিধা

  • দ্রুত আয়ের সুযোগ।
  • কম জায়গায় অধিক মুরগি পালন করা যায়।
  • খাদ্য খরচ কম।

ব্রয়লার মুরগি পালন পদ্ধতি

  • খামারের অবস্থান: পরিষ্কার এবং রোগমুক্ত এলাকা নির্বাচন করতে হবে।
  • খাদ্য: ব্রয়লার মুরগির জন্য উচ্চ মানের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।
  • স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা: নিয়মিত টিকা প্রদান এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ।
  • পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ: খামারে সঠিক তাপমাত্রা এবং আলো নিশ্চিত করা।

ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তালিকা

ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করার সময়, তাদের দ্রুত বর্ধনের জন্য সুষম পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যতালিকা তৈরি করার সময় প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, এবং মিনারেলের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। নিচেব্রয়লার মুরগির খাদ্য উপাদান বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো:

১. শিশু পর্যায় (০-১৪ দিন):
  • প্রোটিন: ২০-২২%
  • শক্তি: ২৯০০-৩০০০ কিলোক্যালরি/কেজি
খাদ্য উপাদান:
  • ভুট্টা: ৫০-৫৫%
  • সয়াবিন মিল: ৩০-৩৫%
  • মাছের গুঁড়ো: ৫-৭%
  • ভিটামিন ও মিনারেল মিশ্রণ: ১-২%
  • উদ্ভিজ্জ তেল: ২-৩%
২. কিশোর পর্যায় (১৫-৩০ দিন):
  • প্রোটিন: ১৮-২০%
  • শক্তি: ৩০০০-৩১০০ কিলোক্যালরি/কেজি
খাদ্য উপাদান:
  • ভুট্টা: ৫৫-৬০%
  • সয়াবিন মিল: ২৫-৩০%
  • মাছের গুঁড়ো: ৩-৫%
  • মিনারেল ও ভিটামিন মিশ্রণ: ১-২%
  • উদ্ভিজ্জ তেল: ২-৩%
৩. প্রাপ্তবয়স্ক পর্যায় (৩১ দিন এবং তার বেশি):
  • প্রোটিন: ১৬-১৮%
  • শক্তি: ৩১০০-৩২০০ কিলোক্যালরি/কেজি
খাদ্য উপাদান:
  • ভুট্টা: ৬০-৬৫%
  • সয়াবিন মিল: ২০-২৫%
  • মাছের গুঁড়ো: ২-৩%
  • ভিটামিন ও মিনারেল মিশ্রণ: ১-২%
  • উদ্ভিজ্জ তেল: ৩-৪%
খাদ্য তৈরির পদ্ধতি:
সব উপাদান সঠিক অনুপাতে মিশিয়ে মুরগিদের জন্য প্যালেট বা গুঁড়ো আকারে প্রস্তুত করুন।
প্রতিদিন খাদ্য তাজা এবং পরিষ্কার হওয়া নিশ্চিত করুন।
মুরগিদের পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করুন, যা সবসময় পরিষ্কার এবং নিরাপদ হওয়া উচিত।

অতিরিক্ত টিপস:
খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক বা হরমোন যোগ করার দরকার নেই। সঠিক পরিবেশ ও খাদ্য দিলেই তারা দ্রুত বর্ধন করবে। এছাড়াও স্থানীয় বাজারে প্রস্তুত ব্রয়লার ফিড কিনতে পারেন যদি নিজে তৈরি করা কঠিন হয়। এবং নিয়মিত ফিডে পরিবর্তন করে দেখুন, যাতে মুরগির স্বাস্থ্যে কোনো সমস্যা না হয়।

ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ভ্যাকসিন প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভ্যাকসিন মুরগিকে বিভিন্ন মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করে এবং দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। নিচে ব্রয়লার মুরগির জন্য সাধারণ ভ্যাকসিনের তালিকা দেওয়া হলো:
ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত এবং ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

ক্রমিক নং

বয়স

রোগের নাম

ভ্যাকসিনের নাম

প্রয়োগ পদ্ধতি

১-৩ দিন

রাণীক্ষেত+ ব্রংকাইটিস

আইবি+ এনডি

চোখে ফোঁটা

১১-১২ দিন

গামবোরো

আই বি ডি

ফুখে ফোঁটা

১৭-১৮ দিন

গামবোরো

আই বি ডি

খাবার পানিতে

১৯-২৩ দিন

রাণীক্ষেত

ল্যাসোটা

চোখে ড্রপ

২৪-২৮ দিন

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা    ( বার্ড ফ্লু )

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা       ( H5N1 )

চামড়ার নিচে ইনজেকশন

৩০-৩৫ দিন

ফাউল পক্স

ফাউল পক্স

ডানায়সূচ ফুটানো

৬-৭ সপ্তাহ

রাণীক্ষেত

এনডি

ঘাড়ের চামড়ার নিচে ইনজেকশন

৮ সপ্তাহ

ফাউল কলেরা

ফাউল কলেরা

নির্দেশনা মোতাবেক

৯ সপ্তাহ

ইনফেকশাস করাইজা, সালমোনেলা

করাইজা + সালমোনেলা

নির্দেশনা মোতাবেক

১০

১২ সপ্তাহ

ফাউল কলেরা

ফাউল কলেরা

নির্দেশনা মোতাবেক

১১

১৫-১৬ সপ্তাহ

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু)

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N1)

চামড়ার নিচে ইনজেকশন

১২

১৬ সপ্তাহ

করাইজা, সালমোনেলা, রাণীক্ষেত, ব্রংকাইটিস

জি + এনডি +আইবি

নির্দেশনা মোতাবেক


ভ্যাকসিন প্রয়োগের নির্দেশনা
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় রাখুন।
  • পরিস্কার সরঞ্জাম: ভ্যাকসিন প্রয়োগের সরঞ্জাম এবং পানি সবসময় জীবাণুমুক্ত হওয়া উচিত।
  • ভ্যাকসিন মিশ্রণ: পানির মাধ্যমে ভ্যাকসিন দিলে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন। ভ্যাকসিনের প্রভাব বাড়াতে এতে ২% স্কিমড মিল্ক পাউডার যোগ করা যায়।
  • সময়মতো প্রয়োগ: তালিকা অনুযায়ী সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করুন।
  • মুরগির অবস্থা পর্যবেক্ষণ: ভ্যাকসিনের পরে মুরগির আচরণ বা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন।
ভ্যাকসিন ব্যবহারের সুবিধা
  • মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ।
  • মৃত্যুহার কমানো।
  • দ্রুত ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
  • উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ।

ব্রয়লার মুরগির ভিটামিনের তালিকা

ব্রয়লার মুরগির দ্রুত বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের একটি সঠিক ভারসাম্যপূর্ণ তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

ব্রয়লার মুরগির ভিটামিনের তালিকা:
ভিটামিন এ (Vitamin A)
  • ভূমিকা: চোখের স্বাস্থ্য, ত্বকের সুরক্ষা এবং সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
  • উৎস: গাজর, পালং শাক, ফিস লিভার অয়েল।
ভিটামিন ডি৩ (Vitamin D3)
  • ভূমিকা: হাড় ও ডিমের খোসা শক্ত রাখে এবং ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।
  • উৎস: সূর্যের আলো, ফিস লিভার অয়েল।
ভিটামিন ই (Vitamin E)
  • ভূমিকা: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • উৎস: ভুট্টার তেল, সয়াবিন তেল।
ভিটামিন কে (Vitamin K)
  • ভূমিকা: রক্ত জমাট বাঁধা (ক্লটিং) প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
  • উৎস: পালং শাক, আলফালফা।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (Vitamin B Complex)
  • ভিটামিন বি১ (থিয়ামিন): স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যক্রমে সহায়তা করে।
  • ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্লাভিন): কোষের শক্তি উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
  • ভিটামিন বি৬ (পাইরিডক্সিন): প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড বিপাকে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন বি১২: রক্তের কোষ তৈরিতে এবং স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়ক।
  • উৎস: শস্যদানা, মাংসের বর্জ্য।
ভিটামিন সি (Vitamin C)
  • ভূমিকা: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং চাপ কমায়।
  • উৎস: টমেটো, কমলা লেবু।
মাইক্রো-মিনারেল:
  • ক্যালসিয়াম (Calcium): হাড় শক্ত রাখে।
  • ফসফরাস (Phosphorus): শক্তি সরবরাহ এবং ডিম উৎপাদনে সহায়তা করে।
  • সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম: দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে।
  • ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium): পেশি এবং স্নায়ুর কার্যক্রমে সহায়ক।
  • জিঙ্ক (Zinc): ক্ষত নিরাময় এবং বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • সেলেনিয়াম (Selenium): রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
প্রস্তুত ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট:
বাজারে পাওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ব্রয়লার মুরগির ভিটামিন প্রিমিক্স ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলোতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সঠিক পরিমাণে মিশ্রিত থাকে।

নোট: সঠিক ডোজ প্রয়োগ এবং ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের আগে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা

ব্রয়লার মুরগির সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য সঠিক ঔষধ ব্যবহারের প্রয়োজন। নিচে ব্রয়লার মুরগির সাধারণ রোগ এবং প্রয়োজনীয় ঔষধের তালিকা দেওয়া হলো:

১. রোগ প্রতিরোধক (প্রফিল্যাকটিক) ঔষধ:

এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটরস (AGPs):
  • নাম: টাইলোসিন, অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, এনরোফ্লক্সাসিন।
  • ভূমিকা: বৃদ্ধি দ্রুত করা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ।
কোকসিডিওস্ট্যাটস:
  • নাম: সালিনোমাইসিন, মোনেনসিন।
  • ভূমিকা: কোকসিডিওসিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ।
ভ্যাকসিনেশন:
  • ND (নিউক্যাসল রোগ): লাইভ ND ভ্যাকসিন।
  • IBD (গাম্বোরো): লাইভ ভ্যাকসিন।
  • Fowlpox, মেরেকস রোগ: নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন।
২. বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য:

মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্টস:
  • নাম: ভিটামিন এ, ডি৩, ই, সি সাপ্লিমেন্ট।
  • ভূমিকা: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণ।
ইলেক্ট্রোলাইট পাউডার:
  • নাম: এলাইট, অর্নালিট।
  • ভূমিকা: দেহে পানিশূন্যতা পূরণ এবং স্ট্রেস কমানো।
৩. ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন:

এন্টিবায়োটিক:
  • নাম: এনরোফ্লক্সাসিন, অ্যাম্পিসিলিন, অক্সিটেট্রাসাইক্লিন।
  • রোগ: CRD (ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ), সালমোনেলা।
মাইকোপ্লাজমোসিস:
  • নাম: টাইলোসিন, ডক্সিসাইক্লিন।
৪. প্রোটোজোয়াল ইনফেকশন:

কোকসিডিওসিস:
  • ঔষধ: এম্প্রোলিয়াম, সালিনোমাইসিন।
৫. ডিহাইড্রেশন বা স্ট্রেস:

ইলেক্ট্রোলাইট ও অ্যান্টি-স্ট্রেস ঔষধ:
  • নাম: অর্নালিট, হাইড্রাইট পাউডার।
  • ভূমিকা: স্ট্রেস হ্রাস এবং পানিশূন্যতা প্রতিরোধ।
৬. পরজীবী সংক্রমণ (প্যারাসাইটিক):

অন্ত্র পরজীবী:
  • ঔষধ: পাইরানটেল পামোয়েট, লেভামিজোল।
বাহ্যিক পরজীবী:
  • ঔষধ: ডেল্টামেথ্রিন স্প্রে (ফ্লি এবং মাইটের জন্য)।
৭. ফাঙ্গাল ইনফেকশন:

অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ঔষধ:
  • নাম: নিস্টাটিন, কেটোকোনাজল।
  • রোগ: অ্যাসপারজিলোসিস।
৮. ডায়রিয়া ও হজমজনিত সমস্যা:

প্রোবায়োটিক ও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ:
  • নাম: প্রোবায়োটিক পাউডার, এনট্রোকুইনল।
  • রোগ: পানির ডায়রিয়া।
৯. ফিড সাপ্লিমেন্টস:

ডাইজেস্টিভ এনজাইম:
  • নাম: লিভটনিক, বিওস্টিম।
  • ভূমিকা: হজমের উন্নতি।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
  • সব ধরনের ঔষধ পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
  • সঠিক ডোজ এবং প্রয়োগ পদ্ধতি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
  • অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার শেষে নির্দিষ্ট উইথড্রয়াল পিরিয়ড মেনে চলতে হবে।
  • ভ্যাকসিন ব্যবহারের আগে সংরক্ষণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
আপনার ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকৃতি অনুযায়ী সঠিক ঔষধ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রয়লার মুরগি কত দিনে ডিম দেয়

ব্রয়লার মুরগি সাধারণত ডিম পাড়ার জন্য পালন করা হয় না, কারণ এদের প্রধান উদ্দেশ্য দ্রুত মাংস উৎপাদন। ব্রয়লার মুরগির বৃদ্ধি ও শারীরিক গঠন এমনভাবে পরিকল্পিত যে, তারা ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত ওজন বাড়ায় এবং মাংস উৎপাদনে উপযুক্ত হয়।

যদি ব্রয়লার মুরগিকে ডিম পাড়ার জন্য রাখা হয়:
  • ব্রয়লার মুরগি সাধারণত ৬-৭ মাস বয়সে ডিম পাড়া শুরু করতে পারে।
  • তবে, এদের ডিম উৎপাদন হার তুলনামূলকভাবে কম এবং ডিম পাড়ার স্থায়িত্বকালও ছোট।
কেন ব্রয়লার মুরগি ডিম উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় না?

  • জেনেটিক পরিবর্তন: ব্রয়লার মুরগির প্রজাতি মাংস উৎপাদনের জন্য তৈরি, ডিম উৎপাদনের জন্য নয়।
  • ওজন ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা: দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়, যা ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত নয়।
  • ফিডের খরচ বেশি: ডিম উৎপাদনের তুলনায় ফিডের ব্যয় বেশি হয়।
ডিম উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত মুরগি:
ডিম উৎপাদনের জন্য লেয়ার মুরগি ব্যবহার করা হয়। লেয়ার মুরগি ১৬-১৮ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে ডিম দেয়।

আপনার যদি ডিম উৎপাদনই লক্ষ্য হয়, তাহলে লেয়ার মুরগি পালন করা অধিক উপযুক্ত।

ব্রয়লার মুরগি বছরে কয়টি ডিম দেয়

ব্রয়লার মুরগি সাধারণত ডিম উৎপাদনের জন্য পালন করা হয় না, কারণ এদের প্রধান লক্ষ্য দ্রুত মাংস উৎপাদন। তবে, যদি ব্রয়লার মুরগিকে বিশেষভাবে ডিম পাড়ার জন্য রাখা হয়, তাহলে তারা বছরে তুলনামূলক কম ডিম দেয়।

ব্রয়লার মুরগির ডিম উৎপাদন ক্ষমতা:
  • একটি ব্রয়লার মুরগি বছরে ১০০-১৫০টি ডিম দিতে পারে।
  • এটি লেয়ার মুরগির তুলনায় অনেক কম। লেয়ার মুরগি বছরে ২৮০-৩২০টি ডিম দিতে সক্ষম।
ব্রয়লার মুরগির কম ডিম উৎপাদনের কারণ:
  • জেনেটিক বৈশিষ্ট্য: ব্রয়লার মুরগি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি এবং মাংস উৎপাদনের জন্য তৈরি করা হয়।
  • শারীরিক গঠন: ওজন বেশি হওয়ার কারণে ডিম পাড়ার হার কম।
  • পুষ্টি চাহিদা: ডিম উৎপাদনের জন্য উচ্চমানের পুষ্টি প্রয়োজন, যা ব্রয়লারের জন্য ব্যয়বহুল।
  • ডিম পাড়ার সময়কাল: ব্রয়লার মুরগি ডিম পাড়া শুরু করতে ৬-৭ মাস সময় নেয় এবং দীর্ঘ সময় ডিম পাড়তে পারে না।
যদি ডিম উৎপাদনের জন্য মুরগি পালন করতে চান:
ডিম উৎপাদনের জন্য লেয়ার মুরগি বা ডুয়াল পারপাস প্রজাতির মুরগি (যেমন: রোড আইল্যান্ড রেড, লেগহর্ন) পালন করা আরও লাভজনক এবং উপযুক্ত।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি, ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম কত , ব্রয়লার মুরগির বৈশিষ্ট্য , ব্রয়লার মুরগি পালনের সুবিধা , ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা , ব্রয়লার মুরগি পালন পদ্ধতি ,ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তালিকা ,ব্রয়লার মুরগির ভিটামিনের তালিকা ,ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা ,ব্রয়লার মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এবং ব্রয়লার মুরগি বছরে কয়টি ডিম দেয় তার বিস্তারিত তথ্য।
তাই এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা কোন উপকারে এসে থাকে তবে অবশ্যই আপনারা আপনাদের বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করবেন।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Club Solver এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url